দাঁতের পোকা বের করার দোয়া - দাঁতের পোকা বের করার মন্ত্র

বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীর ব্যথা করে এটি স্বাভাবিক এবং সবচেয়ে বেশি যেটা ব্যথা করে সেটা হচ্ছে দাঁত খুবই মারাত্মক ব্যথা করে। দাঁতের ব্যথার কারণে মস্তিষ্ক আঘাত পায়। তাই আমরা আজকে আলোচনা করব দাঁতের পোকা বের করার দোয়া ও দাঁতের পোকা বের করার গাছ । 

দাঁতের পোকা বের করার দোয়া

আর নয় চিন্তা দাঁত ব্যথা নিয়ে নিচের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি দাঁত ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক দাঁতের পোকা বের করার দোয়া ও দাঁতের পোকা বের করার মন্ত্র আলোচনা করি। 

পেজ সূচিপত্র ঃ দাঁতের পোকা বের করার দোয়া - দাঁতের পোকা বের করার মন্ত্র

দাঁতের পোকা বের করার দোয়া

দাঁত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি খাদ্য গ্রহণ করার জন্য অপরিহার্য। একইভাবে এটি স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য জরুরী। সুস্থ ও নিরাপদ দাঁত শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তাই ইসলামী শরিয়াহ দাঁতের যত্ন ও সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। 

ইসলামী শরিয়াহ অনুসারে, দাঁতের যত্ন ও পরিচর্যা মুসলিম জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নবী করীম (সা.) বলেছেন, দাঁতের পরিচ্ছন্নতা ও পরিষ্কার রাখা ঈমানের অঙ্গ। (বুখারী, মুসলিম)। অন্য একটি হাদীসে তিনি বলেছেন, মিসওয়াক ব্যবহার করা তোমাদের মুখে পবিত্রতা আনে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে। (নাসায়ী)।

তাই মুসলিমদের কাছে দাঁতের পরিচর্যা শুধু একটি শারীরিক প্রয়োজন নয়, বরং আধ্যাত্মিক পবিত্রতা ও ঈমানদারিকে সমৃদ্ধ করে। এর জন্য ইসলাম বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তন্মধ্যে দাঁতের পোকা বের করার দোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আরো পড়ুনঃ পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর উপায় 

দাঁতের পোকা বলতে একপ্রকার ক্ষুদ্র খাদ্যাবশিষ্টকে বোঝায় যা দাঁতের ফাঁক এবং মাড়ির নিচে জমা থাকে। এগুলো দীর্ঘদিন না সরিয়ে রাখলে দাঁতের গায়ে পরি ধরে এবং দাঁত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ফলে দাঁত পচন, গন্ধ হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই ইসলামী শরিয়াহ দাঁত পরিষ্কার রাখতে দাঁতের পোকা বের করার জোর দিয়েছে।

দাঁতের পোকা বের করার জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক সামগ্রী ব্যবহৃত হতে পারে যেমন- মিসওয়াক, খেজুরের ডালপালা, কাঁচা লঙ্কা ইত্যাদি। বিশেষভাবে মিসওয়াক ব্যবহার করাই বেশি পছন্দনীয়। কারণ নবী করীম (সা.) নিজে মিসওয়াক ব্যবহার করতেন এবং অন্যদেরকেও তা করতে উৎসাহিত করেছেন। 

মিসওয়াক ব্যবহার করলে দাঁত ও মাসরিণাকে পরিষ্কার করা সহজ হয়। এর জন্য প্রথমে প্রচলিত দাঁতের ব্রাশে পানি লাগিয়ে দাঁতগুলো ভালোভাবে মাজতে হয়। এরপর মিসওয়াককে পানিতে ভিজিয়ে অগ্রভাগটি মৃদু করতে হয়। এরপর মিসওয়াকের মাথাটি ৪৫ ডিগ্রীর কোণে রেখে দাঁত ও মাড়ির সন্ধিক্ষেত্রে দিয়ে ঘষতে হবে। 

এভাবে দাঁতের ফাঁক এবং মাড়ির নিচ থেকে পোকাগুলো সহজেই বের করে আনা যায়। একই প্রক্রিয়া দাঁতের উপর, নিচ ও বাঁ-ডান দিকে করতে হবে। মিসওয়াককে পরিবর্তন করে নতুন করে এই প ্রক্রিয়া আবার করতে হয়। যতক্ষণ না পোকা মুক্ত ও পরিষ্কার না হয়।  

তবে শুধু মাত্র দাঁতের পোকা বের করাই যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়া প্রয়োজন। এই দোয়াটি ইসলামী শরিয়াহ সম্মত:

অল্লাহুম্মা বারিক লী ফিহি, ওয়া নাক্কিনী মিনাত তানাবুল

অর্থাৎ "হে আল্লাহ! আমাকে এর বরকত দাও এবং আমাকে মলিন ও অপরিষ্কার বস্তু থেকে পরিত্রাণ দাও।"

দাঁতের পোকা বের করার মন্ত্র

দাঁতের পোকা বা ক্যারিজ হলো একটি জটিল রোগ যা বহু কারণের সমন্বয়ে ঘটে। এর প্রধান কারণগুলি হলো - অপরিষ্কার মুখগহ্বর, বেশিদিন পর্যন্ত খাবারের অবশিষ্টাংশ মুখে থেকে যাওয়া, অতিরিক্ত চিনি মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণ এবং ভুল খাদ্যাভ্যাস। সঠিকভাবে মুখ ধোয়া এবং নিয়মিত দন্ত পরিষ্কার না করলে দাঁতের বীজাণু বেশি জমে এবং অ্যাসিড তৈরি করে, যা দাঁতের লেপ ক্ষয় করে এবং পোকা বা ক্যারিজ তৈরি করে।

দাঁতের পোকা বের করার দোয়া

জাদু-টোনা বা মন্ত্রের মাধ্যমে দাঁতের পোকা বের করা কিছুতেই সম্ভব নয়। দন্ত চিকিত্সকের পরামর্শ অনুসরণ করে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করে এবং নিয়মিত মুখপরিষ্কার রক্ষা করেই দাঁতের পোকা প্রতিরোধ করা সম্ভব। পোকা হলে যথাযথ চিকিত্সা নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।

দাঁতের পোকা দূর করার ওষুধ

দাঁতের পোকা একটি খুবই সাধারণ সমস্যা যা প্রায় সবাইকেই হয়ে থাকে। তবে যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি দাঁতের গাঁ এবং অন্যান্য গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে। সুতরাং দাঁতের পোকা দূর করার জন্য সঠিক ওষুধ ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে দাঁতের পোকা দূর করার ওষুধগুলির বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

দাঁতের পোকা দূর করার ওষুধ

  • ফ্লোরাইড জেল: ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয়প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পোকার বৃদ্ধি রোধ করে। ফ্লোরাইড জেল প্রায়শই দন্তচিকিৎসকদের কাছে পাওয়া যায়। তারা এটি দাঁতের উপর লাগিয়ে দেন যা কিছুক্ষণ পরে মুছে ফেলতে হয়।
  • ফ্লোরাইড ভার্নিশ: এটি একটি লেকচে তরল যা দাঁতের উপর লাগানো হয়। এটি ফ্লোরাইডের উচ্চ মাত্রা সরবরাহ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দেয়। ফ্লোরাইড ভার্নিশ প্রায় ৬ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে।
  • ফ্লোরাইড মাউথওয়াশ: দাঁত ব্রাশ করার পর মাউথওয়াশ করলে এটি দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফ্লোরাইড মাউথওয়াশ দাঁতের ক্ষয়প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • ক্লোরহেক্সিডিন মাউথওয়াশ: এটি একটি প্রবল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল মাউথওয়াশ যা মুখের জীবাণু হ্রাস করে এবং পোকা প্রতিরোধে সাহায্্য করে।
  • অ্যামাইন ফ্লোরাইড টুথপেস্ট: স্ট্যানোস ফ্লোরাইড বা অ্যামাইন ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • পিটসিট: এটি একটি প্রাকৃতিক ফাইবার যা দাঁতের গর্তে ঢোকে এবং সেখানে প্রাকৃতিক সিলিং তৈরি করে। এভাবে এটি পোকা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • কার্বামাইড পেরক্সাইড: এটি একটি ব্লিচিং এজেন্ট যা দাঁতের উপরিতল দুর্বল করে এবং পোকা সৃষ্টি করে না।
  • অ্যামলগ্যাম ফিলিং: পুরাতন পোকাগ্রস্ত এলাকাগুলি অ্যামলগ্যাম ফিলিং দ্বারা পুনরায় ভরাট করা হয় যাতে আরও পোকা না হয়।

দাঁতের পোকা প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত দন্তচিকিৎসা পরীক্ষা, সঠিক দাঁত ব্রাশিং এবং ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। যদি দাঁতে পোকার লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা নিন।

দাঁতের পোকা বের করার গাছ

দাঁতের পোকা বের করার গাছ দাঁতের পোকা একটি খুবই ব্যথাদায়ক ও যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা। এটি দাঁতের গোড়ায় সংক্রমণের কারণে ঘটে। যদি এটি সময়মতো চিকিত্সা না করা হয়, তবে এটি দাঁত বা দাঁতের আশেপাশের অঞ্চলে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অনেকে দাঁতের পোকা সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন গাছের বিকল্প ব্যবহার করেন। 

দাঁতের পোকা বের করার গাছ

কিছু গবেষণা অনুসারে, দাঁতের পোকা বের করার জন্য নিম্নলিখিত গাছগুলি কার্যকরী হতে পারে:

  • নিম গাছ: নিম গাছের পাতা ও ছাল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাংগাল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ। এগুলি দাঁতের পোকা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। নিমের তরল ঘষে দাঁতের গর্তে প্রলেপ দিলে পোকা বের হয়ে আসতে পারে।
  • তুলসী গাছ: তুলসী গাছের পাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাংগাল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। তুলসীর রস দাঁতের গর্তে প্রয়োগ করলে দাঁতের পোকা নিরাময় হতে পারে।  
  • লেবু গাছ: লেবুর রসের অ্যাসিডিক স্বভাব বাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধ করে। সুতরাং, লেবুর রস দাঁতের গর্তে প্রয়োগ করলে দাঁতের পোকা বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আদা গাছ: আদার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান দাঁতের গর্তের প্রদাহ কমাতে পারে। আদার গুঁড়া পানি দিয়ে গোলিয়ে দাঁতের গর্ত ঢেকে রাখলে দাঁতের পোকা বের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • কালোজিরা গাছ: কালোজিরার তৈলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। দাঁতের গর্তে করে কালোজিরার তৈল প্রলেপ দিলে পোকা বের হওয়ার সুবিধা হয়।

তবে এসব গাছগুলি সামান্য উপশমের পথ মাত্র। দাঁতের পোকার ক্ষেত্রে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয়। যদি উপসর্গগুলি গুরুতর হয় বা সমস্যা আরও বেশি বাড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই দন্তচিকিত্সকের সাহায্য নিতে হবে। দাঁতের পোকার বিষয়ে সচেতন থাকা এবং সময়মতো চিকিত্সা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

দাঁতের পোকা বের করার পদ্ধতি

ভাল দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে দাঁতের পোকা বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দাঁতের পোকা হলে তা সময়মত চিকিৎসা না করালে বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর্টিকেলটি পড়লে আপনি দাঁতের পোকা বের করার পদ্ধতি সঠিক  ভাবে জানতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ

দাঁতের পোকা এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়। এটি দাঁতের গায়ের অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ধীরে ধীরে দাঁতের গভীরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। যদি সময়মত চিকিৎসা না করানো হয়, তাহলে পোকা আরও গভীরে ছড়িয়ে পড়বে এবং মজ্জা অংশ পর্যন্ত যেতে পারে। এতে তীব্র যন্ত্রণা লাগে এবং অবশেষে দাঁতটি পচে যায়। 

দাঁতের পোকা রোগীদের প্রায়শই অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই পোকা শুরু হলেই দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন। দাঁতের পোকা বের করার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা হয়।

  • পোকার স্থানাঙ্কন (Detection): প্রথমেই পোকার অবস্থান ঠিক করে নেওয়া হয়। এজন্য X-ray বা অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়। স্থানাঙ্কন করতে সহায়তা করে পোকার লক্ষণ যেমন- দাঁতের ব্যথা, দাঁতে কালো দাগ দেখা যাওয়া ইত্যাদি।
  • অ্যানেস্থেসিয়া (Anesthesia): পোকা বের করার সময় রোগীকে যন্ত্রণামুক্ত করতে স্থানীয় অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। এতে রোগী বেশি যন্ত্রণা অনুভব করবে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ অ্যানেস্থেসিয়াও প্রয়োগ করা হতে পারে।
  • পোকা অপসারণ (Decay Removal): পোকা মুক্ত করার জন্য ভেতরের অংশের পোকা অপসারণ করতে হয়। এজন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি ও ড্রিল ব্যবহার করা হয়। দাঁতের গায়ের অংশ থেকে পোকা সাফ করে নেওয়া হয়। এছাড়াও হ্যান্ডপিস ও ভ্যাকুয়ামের মাধ্যমে পোকা অপসারণ করা হয়। 
  • রুট ক্যানাল থেরাপি (Root Canal Therapy): দাঁতের মজ্জা অংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে রুট ক্যানাল থেরাপি করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় মজ্জা অংশ পুরোপুরি অপসারণ করা হয়। অতঃপর এই খালি ফাঁকা জায়গায় গুঁড়ো দেওয়া হয়। এভাবে মজ্জার সংক্রমণ দূর করা হয়।
  • ফিলিং (Filling): পোকা ও মজ্জা সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করার পর দাঁতে ফিলিং দেওয়া হয়। এর ফলে দাঁতের খালি জায়গা পূর্ণ হয়ে যায় এবং ফাঁকা স্থানটি বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় বেস ম্যাটারিয়াল বা কোর ম্যাটারিয়ালের পর ফিলিং দেওয়া হয়।
  • ক্রাউন অ্যাপ্লিকেশন (Crown Application): ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতটি পুরোপুরি ক্রাউন দিয়ে মোড়া হয়। ক্রাউন কিছুটা দাম্ভী কিন্তু এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য দাঁতটি সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।   
  • ফলোআপ (Followup): পোকা বের করার পরে মাঝে মাঝে ফলোআপ করা প্রয়োজন। কারণ সময়ে সময়ে পোকা আবার উপস্থিত হতে পারে। তাই নিয়মিত পরীক্ষা ও ভিজিট করতে হবে।

দাঁতের পোকা বের করার পদ্ধতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত আলোচনা করছি। 

দাঁতের পোকা মোকাবেলায় প্রথম ধাপ হলো যথাযথভাবে পোকার স্থান নির্ণয় করা। এজন্য X-ray বা রেডিওগ্রাফির সাহায্য নেওয়া হয়। এছাড়াও কিছু বিশেষ পরীক্ষা যেমন- ফাইবার অপটিক ট্রান্সিলুমিনেশন (FOTI), লেজার ফ্লুওরেসেন্স ডাયাগনস্টিক এইড, ডাইজাইল রেডিওগ্রাফি ইত্যাদি করা হয়। এগুলোর মাধ্যমে পোকার অবস্থান এবং গভীরতা নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

পোকার স্থান নির্ণয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো পোকার এলাকাকে নিষ্ক্রিয় করা। এজন্য স্থানীয় অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। বিভিন্ন ধরনের অ্যানেস্থেটিক যেমন- লিডোকেইন, বুপিভাকেইন, মেপিভাকেইন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। জটিল কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। এরপর শুরু হয় পোকা অপসারণের প্রক্রিয়া।

এজন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিকভাবে হ্যান্ড এক্সকাভেটর দিয়ে পোকার বাইরের অংশ সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ব্যালহুক ও ডিস্ক দিয়ে পোকার গভীরের অংশ সরানো হয়। স্লো স্পিড হ্যান্ডপিস ও হাই স্পিড হ্যান্ডপিস ডায়ামন্ড বা কারবাইড বাই বা ড্রিল ব্যবহার করা হয় এই কাজে। যদি পোকা মজ্জা অংশে ছড়িয়ে পড়ে থাকে, তাহলে রুট ক্যানাল থেরাপির আশ্রয় নেওয়া হয়। 

এক্ষেত্রে স্পেশাল ফাইল দিয়ে দাঁতের মজ্জা সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করা হয়। মজ্জা অপসারণের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রলেপন সামগ্রী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এরপরের পদক্ষেপ হলো দাঁতের খালি জায়গায় ফিলিং করা। ট্রেডিশনাল এজাম্যাল আয়রন গ্লাস ইনলে, কম্পোজিট রেজিন এবং গ্লাস আয়নোমার সিমেন্ট ব্যবহৃত হয় ফিলিং হিসেবে।

আধুনিক পদ্ধতিতে বালক ফিলিং ম্যাটারিয়ালস ব্যবহার করা হচ্ছে যেগুলোতে ক্ষতির আশঙ্কা অনেক কম। যদি দাঁতটি অনেকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাহলে ক্রাউন প্রয়োগ করা হয়। ক্রাউন বানানোর জন্য মূলত মেটাল আলয়েজ, দাঁত এবং সিরামিক ব্যবহার করা হয়। ফাইবার রেইনফোর্সড কম্পোজিট ব্যবহারও বেড়েছে সম্প্রতি।   

আরো পড়ুনঃ দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

পোকা বের করার পরে রোগীদের কয়েকটি পরামর্শ অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয়। যেমন- যন্ত্রণাহারী এবং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া, ঠাণ্ডা খাবার খাওয়া এড়ানো, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, নিয়মিত ফলোআপ পরীক্ষা করানো ইত্যাদি। নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে পোকা বের করার পর দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। এভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে দাঁতের পোকা বের করা হয়।

এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া হলেও আধুনিক দাঁত চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এটি সফলভাবে সম্পন্ন করা যায়। দাঁত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বলে এর সঠিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সচেতনতা এবং সময়মত চিকিৎসার মাধ্যমেই দাঁতের পোকা প্রতিরোধ করা সম্ভব। দাঁতের পোকা একটি বিষম ব্যাপার তবে সময়মত চিকিৎসা করালে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজেই পোকা বের করা যায়। তাই দাঁত সুস্থ রাখতে হলে দাঁতের যত্ন নেওয়া ও নিয়মিত পরীক্ষা আবশ্যক।

লেখকের মন্তব্য ঃ দাঁতের পোকা বের করার দোয়া - দাঁতের পোকা বের করার মন্ত্র

বর্তমান যুগে বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা ছাড়া দাঁতের সমস্যা সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। দোয়া অথবা মন্ত্র দিয়ে দাঁতের পোকা বের করার কোনো প্রামাণ্য সত্যতা নেই। এগুলো শুধুমাত্র অন্ধবিশ্বাস এবং ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। দাঁত স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করা, সুষম খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। 

শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেই দাঁতের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মধ্যে দাঁতের পোকা বের করার গাছ সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি । দোয়া বা মন্ত্র বিশ্বাস করলে তা শুধু সময় এবং অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই করবে না। সুতরাং দাঁত স্বাস্থ্য রক্ষায় অবশ্যই বৈজ্ঞানিক উপায়গুলো অবলম্বন করতে হবে। দোয়া বা মন্ত্রের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। এটাই হচ্ছে সুস্থ দাঁতের একমাত্র রাস্তা। 

প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধু  সাথে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও এই সকল টিপস গুলো মেনে চলতে পারে। সবাই ভালো থাকবেন আর নিয়মিত আমাদের পোস্টগুলো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। সবার জন্য শুভকামনা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি গর্জিয়াস নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url