দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ - দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাঁত ব্যথা একটি খুবই সাধারণ এবং ভয়ানক যন্ত্রণাদায়ক অসুখ। এটি মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম বিঘ্নিত করে এবং তাদের জীবনযাত্রার মানকে নষ্ট করে। চলুন জীবনযাত্রা সহজ করার জন্য আজকে আমরা আলোচনা করি  দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ ও দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়। 

দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ

দাঁতের ব্যথা আসতে পারে বিভিন্ন কারণে যেমন - দাঁতের গর্ত, দাঁতের অ্যাবসেস, দাঁতের মগজের প্রদাহ, দাঁতের ক্ষয় ইত্যাদি। এই ভূমিকায় আমি দাঁত ব্যথার প্রধান কারণগুলি, লক্ষণগুলি এবং এর প্রতিকার বিষয়ে আলোচনা করব। আমি দাঁত সুরক্ষার জন্য কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করব যাতে দাঁত ব্যথা এড়ানো যায়। দাঁতের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ একজন মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য এটি খুবই প্রয়োজন।

পেজ সূচিপত্র ঃ দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ - দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ 

দাঁতের পোকা সমস্যাটি এখন খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে এটি সমাধান করা যায় যদি আমরা সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করি। নিচে দাঁতের পোকা নিরাময়ের বিস্তারিত আলোচনা করা হল:

দাঁতের পোকা কি এবং এর কারণ

দাঁতের পোকা হল দাঁতের ক্ষয়, যা দাঁতের ওপর কালো বা বাদামী রঙের দাগ তৈরি করে। এটি হয় দাঁতের ওপর জমা থাকা জীবাণুর কারণে। মুখের অভ্যন্তরে থাকা ব্যাকটেরিয়া খাবার থেকে শর্করা গ্রহণ করে এসিড তৈরি করে। এই এসিড দাঁতের মিনারেল পদার্থকে নষ্ট করে দেয়, ফলে দাঁতের ওপর ক্ষয় হয়। যদি দাঁতের পোকাকে দ্রুত চিকিৎসা না করা হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এটি গভীরতর হয়ে দাঁতের মাংসপেশীতে প্রভাব ফেলতে পারে।

দাঁতের পোকার লক্ষণগুলি হল:

  • দাঁতের ওপর কালো বা বাদামী রঙের দাগ
  • দাঁত খাওয়ার সময় ব্যথা বা সংবেদনশীলতা 
  • দাঁত থেকে দুর্গন্ধ আসা
  • দাঁত থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া


দাঁতের পোকা প্রতিরোধের উপায়গুলি

দাঁতের পোকা প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত ভাল মাউথ কেয়ার অনুশীলন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও কিছু পদ্ধতি রয়েছে যা অনুসরণ করলে দাঁতের পোকা প্রতিরোধ করা সম্ভব:

  • দাঁত ব্রাশ করার সময় দাঁতের ওপর জমা প্লাক সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা উচিত। প্রতিদিন দু'বার দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
  • ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত। ফ্লোরাইড দাঁতকে শক্তিশালী করে এবং এসিডের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মুখের অভ্যন্তরে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করে।
  • শর্করা এবং এসিডযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত কারণ এগুলি দাঁতের পোকার ঝুঁকি বাড়ায়।
  • প্রতিদিন দাঁত ফ্লসিং করলে দাঁতের মাঝখানে জমা থাকা খাদ্যাবশেষ দূর হয়ে দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করে।


নিয়মিত দন্ত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং দাঁত পরীক্ষা করানো উচিত। তারা দাঁতের পোকার লক্ষণ দেখতে পেলে প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা করতে পারবেন

প্রাকৃতিকভাবে দাঁতের পোকা দূর করার উপায়


বাংলাদেশে দাঁতের পোকা দূর করার জন্য নিম্নলিখিত কয়েকটি প্রাকৃতিক এবং ঔষধি উপাদান ব্যবহৃত হয়:

  • আদা (Ginger): আদা প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ সম্পন্ন। দাঁতের পোকা প্রতিরোধে এটি কার্যকর।
  • লবঙ্গ (Clove): লবঙ্গের অ্যানালজেসিক ও অ্যান্টিসেপটিক গুণ আছে। দাঁতের ব্যথা কমাতে এবং পোকা রোধে এটি ব্যবহৃত হয়।
  • মিঠামিরিচ (Chilli): মিঠামিরিচের ক্যাপসাইসিন আছে যা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল। দাঁতের পোকা প্রতিরোধে এটি সহায়ক।  
  • সজিনা (Perilla): সজিনা দাঁতের পোকা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল গুণ রয়েছে।
  • কালোজিরা (Black Cumin): কালোজিরায় অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যানালজেসিক উপাদান রয়েছে যা দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • মেথি (Fenugreek): মেথির অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতের পোকা প্রতিরোধে কার্যকর।
  • বকুল (Mimusops elengi): বকুল গাছের অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ও অ্যানালজেসিক গুণ আছে যা দাঁতের ব্যথা ও পোকা প্রতিরোধে সহায়ক।
  •  নিম (Neem): নিমের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিভায়রাল উপাদান দাঁতের পোকা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।
  • কাঁচা লেবু (Raw Lemon): কাঁচা লেবুর অ্যাসিডিক গুণ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে দাঁতের পোকা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • গোলমরিচ (Peppercorn): গোলমরিচের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সহায়ক।

উপরোক্ত উপাদানগুলি বাংলাদেশে দাঁতের পোকা নিরাময়ে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি এগুলি ব্যবহার করা উচিত।

দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ  - দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাঁতের পোকা চিকিৎসার জন্য এলোপ্যাথিক ওষুধগুলি

বাংলাদেশে দাঁতের পোকা চিকিৎসার জন্য নিম্নলিখিত এলোপ্যাথিক ওষুধগুলি প্রচলিত:

  • ফ্লোরাইড জেল: ফ্লোরাইড জেল দাঁতকে শক্তিশালী করে এবং পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেভামার ফ্লোরাইডজেল, ক্লিনিসেপ্ট ফ্লোরাইড জেল প্রভৃতি প্রণালী বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
  • ক্লোরহেক্সিডিন মাউথওয়াশ: এটি একটি অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ যা মুখের অভ্যন্তরে থাকা বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া দূর করে। হেক্সিডিন, পেরিডেক্স প্রভৃতি ব্রান্ড বাজারে পাওয়া যায়।
  • ট্রাইএডেন্ট টুথপেস্ট: এটি একটি ট্রাইক্লোসান সমৃদ্ধ টুথপেস্ট যা ব্যাকটেরিয়া দূরীকরণে সহায়তা করে। 
  • অ্যামোক্সিসিলিন: যদি দাঁতের পোকা গভীর থাকে এবং জীবাণু সংক্রমণ থাকে তাহলে এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করা হয়।
  • মেট্রোনিডাজোল: গভীর দাঁতের পোকায় এই অ্যান্টিপ্রোটোজোয়াল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ওষুধ নির্দেশ করা হয়।
  • আইবুপ্রোফেন: দাঁতের পোকার কারণে যে ব্যথা হয় তা নিরসনে এই অ্যানালজেসিক ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ নির্দেশিত হয়।
  • প্রেডনিসোলোন: গভীর পোকা থাকলে দাঁতের চারপাশের অঞ্চলে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে এই স্টেরয়েড বসানো হয়।
  • ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড লাইনার: দাঁতের রুট-চ্যানেল থেরাপিতে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে।
  • গ্লাস আইয়নোমার সিমেন্ট: পোকা দূর করার পর দাঁতের কwholesপুরণের জন্য এই বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান ব্যবহৃত হয়।
  • চিত্রানসাদ্রিষ্টা: দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি দাঁতের পোকা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।  
অনেক সময় দন্ত চিকিৎসকরা একাধিক ওষুধের সমন্বয়ে দাঁতের পোকা চিকিৎসা করেন। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং ওষুধ নির্বাচনের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

দাঁতের পোকা নিরাময়ের উপায়গুলি

যদি দাঁতের পোকা হয়ে থাকে, তবে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা যেতে পারে:

ফ্লোরাইড ট্রিটমেন্ট: এটি দাঁতের মিনারেল পুনরায় সঞ্চালন করে এবং দাঁতকে শক্তিশালী করে। দন্ত চিকিৎসক ফ্লোরাইড জেল দিয়ে ট্রিটমেন্ট দিতে পারেন।

ফিলিং: যদি পোকা খুব গভীর না হয়, তবে দন্ত চিকিৎসক সেখানে ফিলিং করে দিতে পারেন। এটি পোকাযুক্ত অংশটি বের করে নতুন উপাদানে পূরণ করে।

রুট চ্যানেল থেরাপি: যদি দাঁতের পোকা দাঁতের মাংসপেশীতে প্রবেশ করে, তবে রুট চ্যানেল থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় দন্ত চিকিৎসক দাঁতের মাংসপেশী সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলে দেন এবং দাঁতকে পূরণ করে দিয়ে বন্ধ করে দেন।

ক্রাউন: যদি দাঁতের গাঢ়তম অংশগুলি পোকাযুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে দন্ত চিকিৎসক দাঁতটির উপরিভাগ সম্পূর্ণভাবে কেটে ফেলে নতুন করে ক্রাউন চাপিয়ে দিতে পারেন।

দাঁত উপড়ানো: যদি দাঁতের পোকা খুবই গভীর হয়ে যায় এবং অন্য কোনও উপায়েই চিকিৎসা সম্ভব না হয়, তাহলে শেষ পন্থা হিসেবে দাঁত উপড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। তবে এটি সর্বশেষ বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ওষুধ: দাঁতের পোকা রোগীদের কিছু ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হতে পারে যা দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করে। যেমন - এন্টিবায়োটিক, ফ্লোরাইড জেল, এসিড নেউট্রালাইজার ইত্যাদি।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: দাঁতের পোকা থেকে মুক্তি পেতে রোগীদের অবশ্যই তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। তাদের অবশ্যই শর্করাযুক্ত এবং এসিডযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। পরিবর্তে তাদের প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি এবং দুধজাত খাবার গ্রহণ করতে হবে।

দাঁত পরিষ্কার রাখা: দাঁতের পোকা রোগীদের অবশ্যই তাদের দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে। তাদের নিয়মিত দাঁত ব্রাশ, ফ্লসিং এবং মাউথওয়াশ করতে হবে। এছাড়াও তারা নিয়মিতভাবে দন্ত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

বায়োফিল্ম নিয়ন্ত্রণ: দাঁতের পোকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল দাঁতের ওপর বায়োফিল্ম জমা হওয়া। বায়োফিল্ম হল ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণুর একটি স্তর যা দাঁতের ওপর জমা থাকে। নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করা, এন্টিব্যাকটেরিয়াল মাউথওয়াশ ব্যবহার এবং বায়োফিল্ম নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ নেওয়ার মাধ্যমে বায়োফিল্ম নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
;'
সারাংশে বলা যায়, দাঁতের পোকা একটি জটিল সমস্যা যা নানাভাবে চিকিৎসা করা যায়। তবে প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত দাঁতের পোকা প্রতিরোধ করা। এজন্য নিয়মিত ভাল মাউথ কেয়ার অনুশীলন করা এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি দাঁতের পোকা হয়ে থাকে, তবে দ্রুত দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া উচিত। এভাবে দাঁতের পোকাকে দূর করা সম্ভব এবং সুস্থ্য দাঁত রাখা যায়।

দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাঁতের গর্ত একটি খুবই সাধারণ এবং ব্যাপক সমস্যা। এটি মূলত দাঁতের পচন বা ক্ষয়ের ফলে ঘটে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে দাঁতে জমে থাকা বাদাম এবং অন্যান্য খাদ্য আবর্জনা দাঁতের ক্ষতি করে এবং ক্রমশ এক ধরনের গর্ত তৈরী হয়। দাঁতের গর্ত দূর করার জন্য নানা ধরনের ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। নিচে আমরা দাঁতের গর্ত দূর করার কিছু প্রভাবশালী ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব:

লবণ এবং লেবুর রস মিশ্রণ:

লবণ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং লেবুর রস অ্যাসিডিক হওয়ায় এই দুটি উপাদান দাঁতের গর্তের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রসের অ্যাসিডিক তীব্রতা দাঁতের উপরিতলে জমে থাকা বাদাম কেটে দেয়। তবে যদি গর্তে কোনো ক্ষতস্থান থাকে সেক্ষেত্রে লেবুর রসের অ্যাসিড ব্যথা দিতে পারে। তাই এই পদ্ধতি অনুসরণ করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

তুলসী পাতা এবং অদিনার গুঁড়ো মিশ্রণ:

তুলসী পাতা এবং অদিনায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান রয়েছে যা দাঁতের গর্তের জীবাণু দূর করতে সহায়তা করে। একইভাবে, হলুদের গুঁড়ো এবং নারিকেলের তেল মিশ্রণও দাঁতের গর্ত দূর করার জন্য অতি কার্যকর।

ডিল তেল এবং হলুদের গুঁড়ো:

ডিল তেল বা নেই়ামুখী তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে আর হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী রয়েছে। এই দুটি মিশিয়ে দাঁতের গর্তে লাগালে দাঁতের প্রদাহ এবং গর্তের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে।

জিরা গুঁড়ো:

জিরা গুঁড়ো দিয়ে নিয়মিত দাঁত ঘষলে এটি দাঁতের উপর জমে থাকা বাদাম কেটে দেয়ার পাশাপাশি গর্তের জীবাণু দূরীকরণে সহায়তা করে।

কম চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ:

চিনির পরিমাণ বেশি থাকলে তা মুখে অ্যাসিড তৈরী করে যা দাঁতের জমাট বাদাম বাড়িয়ে দাঁতের গর্ত সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই চিনি এবং চটপটে খাবার যেমন চিপস, কেক, চকলেট এবং কোল্ড ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলতে হবে।

নিয়মিত মুখ ও দাঁতের পরিচর্যা:

দাঁত ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে দাঁতের গর্তের সমস্যা বেড়ে যাবে। তাই নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা এবং মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার রাখা জরুরি।

পানী ও শাক-সবজির মাত্রা বাড়ানো:

যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করা এবং শাক-সবজি গ্রহণ করলে এটি মুখে লালার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। এই লালায় অসংখ্য অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা দাঁতের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে।

পেশাদার চিকিৎসা:

যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁতের গর্ত না কমে তাহলে অবশ্যই ডেন্টাল ক্লিনিকে গিয়ে পেশাদার চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ দাঁতের গর্ত অবহেলা করলে এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে এবং গুরুতর সমস্যায় পরিণত হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ

দাঁতের গর্ত একটি খুবই জটিল এবং দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হতে পারে। এটি শুধুমাত্র ঘরোয়া উপায়ে সম্পূর্ণভাবে দূর করা সম্ভব নয়। তবে ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে গর্তের আকার এবং জীবাণুর সংখ্যা কমানো সম্ভব। নিচে দাঁতের গর্ত দূর করার আরও কিছু ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলো:

নিম্বু এবং রসুন:

নিম্বু এবং রসুনে প্রচুর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান রয়েছে। নিম্বুর রসে অ্যাসিডিক তীব্রতা থাকায় এটি দাঁতের উপরের জমাট বাদাম কেটে দেয়। আর রসুনে থাকা অ্যালিসিন নামক উপাদানটি জীবাণু দমন করতে সাহায্য করে। 

গামবগা চূর্ণ:

গামবগা বা বাঁশকা চূর্ণে রয়েছে ইউজিনল নামক উপাদান যা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাংগাল গুণের। একটু গামবগা চূর্ণ নিয়ে আঙ্গুল দিয়ে দাঁতের গর্তে মাজতে হবে। এটি গর্তের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করবে।

মৌরী গুঁড়ো:  

মৌরী গুঁড়ো একটি খুবই শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল দ্রব্য। এতে অ্যান্টি-ফাংগাল এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। দাঁতের গর্তে মৌরী গুঁড়ো মাখলে এটি সেখানকার জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

শঙ্খপুঁটি চূর্ণ:

শঙ্খপুঁটি অ্যাকাল্কাইন প্রকৃতির হওয়ায় এটি দাঁতের গর্তের জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। একটু শঙ্খপুঁটি চূর্ণ দাঁতের গর্তে লাগিয়ে রাখতে হবে। যা জীবাণু দমনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

কনারগাছের চূর্ণ: 

কনারগাছের কান্ড-পাতা এবং ছালে অ্যান্টি-সেপটিক উপাদান রয়েছে। এগুলোর চূর্ণ দাঁতের গর্তে লাগালে এটি জীবাণু দমন করতে সাহায্য করে।

মরিচ গুঁড়ো:

মরিচ গুঁড়োতে রয়েছে পাইরিন নামক এক ধরনের উপাদান যা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণের। দাঁতের গর্তে মরিচ গুঁড়ো লাগালে এটি বাদামের জমাট কমিয়ে এবং জীবাণু দূর করে গর্ত দূর করতে সহায়তা করে।

এছাড়াও যদি স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা থাকে যেমন- ডায়াবেটিস বা হরমোনের অসন্তুলন তাহলে সাধারণভাবে দাঁতের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই এসব ক্ষেত্রে পেশাদার চিকিৎসক এবং ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুসরণ করা প্রয়োজন। ঘরোয়া উপায়গুলো দাঁতের প্রাথমিক পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

কিন্তু গুরুতর সমস্যার ক্ষেত্রে এগুলো যথেষ্ট নয়। সেক্ষেত্রে অবশ্যই পেশাদার চিকিৎসার প্রয়োজন হবে। দাঁতের গর্ত মূলত দাঁতের পচন বা ক্ষয়ের কারণে হয়ে থাকে। তাই এটি একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এই সমস্যা সম্পূর্ণ দূর করতে হলে পেশাদার চিকিৎসার বিকল্প নেই। তবে সাধারণ গর্তের ক্ষেত্রে ঘরোয়া

লেখকের মন্তব্য ঃ দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ - দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাঁতের যত্ন নেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দাঁতের পোকা এবং গর্ত প্রতিরোধ করতে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা উচিত।  এবং দাঁতের পোকা দূর করার ঔষধ।  আপনার দাঁতের গর্ত হয়ে থাকলে দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলতে হবে আপনাকে। যদি কোনও সমস্যা থাকে, তবে দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এটি দাঁতের পোকা এবং গর্তের বিষয়ে সামান্য তথ্য উপস্থাপন করেছে। আপনি যদি বিশদ বিবরণ চান তবে আমাকে জানাতে পারেন।

প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধু  সাথে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও এই সকল টিপস গুলো মেনে চলতে পারে। সবাই ভালো থাকবেন আর নিয়মিত আমাদের পোস্টগুলো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। সবার জন্য শুভকামনা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি গর্জিয়াস নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url